brand
Home
>
Foods
>
Eton Mess

Eton Mess

Food Image
Food Image

ইটন মেস একটি ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ ডেসার্ট যা মূলত স্ট্রবেরি, মারেঙ্গ এবং ক্রিমের সমন্বয়ে তৈরি হয়। এটি একটি সহজ এবং সোজা ডেসার্ট, যা সাধারণত গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে স্ট্রবেরির মৌসুমে পরিবেশন করা হয়। ইটন মেসের ইতিহাস অনুসন্ধান করলে জানা যায় যে এটি ব্রিটেনের ইটন কলেজের সাথে যুক্ত। কাহিনী অনুযায়ী, ১৯ শতকের শেষের দিকে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা একটি পিকনিকের সময় একটি পাত্রে মারেঙ্গ ভেঙে ফেলার ফলে এই ডেসার্টটি উদ্ভূত হয়। ইটন মেসের স্বাদ অত্যন্ত মিষ্টি এবং ক্রিমি। এর মধ্যে স্ট্রবেরির টাটকা স্বাদ এবং মারেঙ্গের হালকা ও ক্রাঞ্চি টেক্সচার একটি অসাধারণ সমন্বয় তৈরি করে। ক্রিমের রেশমী গুণ এবং স্ট্রবেরির ফলমূলের মিষ্টতার কারণে এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ডেসার্ট। বিশেষ করে গরম গ্রীষ্মের দিনে এটি একটি সতেজকারী এবং সুস্বাদু খাবার হিসেবে গণ্য হয়। ইটন মেস প্রস্তুত করা খুবই সহজ এবং দ্রুত। প্রথমে স্ট্রবেরিগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে টুকরো করে কেটে নিয়ে কিছুক্ষণ চিনি দিয়ে ম্যারিনেট করা হয় যাতে স্ট্রবেরির রস বেরিয়ে আসে। এরপর মারেঙ্গ তৈরি করতে হয়, যা মূলত ডিমের সাদা অংশ এবং চিনি মিশিয়ে ফেটানো হয়। মারেঙ্গটি পুডিংয়ের মতো হালকা এবং বাতাসে ভরা হয়। তারপর একটি বড় পাত্রে মারেঙ্গ, স্ট্রবেরি এবং হালকা ফেটানো ক্রিম একত্রিত করে নেয়া হয়। সবগুলো উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হয়, কিন্তু খুব বেশি না, যাতে মারেঙ্গের গঠন বজায় থাকে। ইটন মেসের মূল উপাদানগুলো হলো স্ট্রবেরি, মারেঙ্গ এবং ক্রিম। স্ট্রবেরি একটি মৌসুমী ফল, যার ফলে এটি গ্রীষ্মের সময় সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। মারেঙ্গের জন্য সাধারণত ডিমের সাদা অংশ এবং চিনি ব্যবহার করা হয়, যা ডেসার্টটিকে একটি বিশেষ টেক্সচার দেয়। ক্রিম হিসেবে সাধারণত হেভি ডিউটির ক্রিম ব্যবহার করা হয়, যা ফেটানোর পর রেশমী এবং মসৃণ হয়ে যায়। সারসংক্ষেপে, ইটন মেস একটি প্রিয় ব্রিটিশ ডেসার্ট যা তার সাদাসিধে প্রস্তুতির পদ্ধতি এবং মিষ্টি স্বাদের জন্য ভোক্তাদের মাঝে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। গ্রীষ্মের সময়ে এটি একটি আদর্শ ডেসার্ট হিসেবে বিবেচিত হয়, যা যে কোনো অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা যায়।

How It Became This Dish

ইটন মেসের ইতিহাস: একটি সুমিষ্ট যাত্রা ইটন মেস, যুক্তরাজ্যের একটি জনপ্রিয় ডেজার্ট, যা প্রধানত স্ট্রবেরি, মেরিংue এবং ক্রিমের সংমিশ্রণে তৈরি হয়। এটি একাধারে সুস্বাদু এবং দৃষ্টিনন্দন, যা ইংল্যান্ডের একটি বিশেষ ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে পরিচিত। এটির ইতিহাস এবং উৎপত্তি নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। আসুন, আমরা ইটন মেসের ইতিহাস এবং এর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা করি। উৎপত্তি ইটন মেসের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। সাধারণভাবে এটি মনে করা হয় যে, নামটি ইংল্যান্ডের প্রখ্যাত ইটন কলেজ থেকে এসেছে। ইটন কলেজ, ১৪৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত, ব্রিটেনের এক অভিজাত বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। ইটন মেসের ইতিহাসে একটি জনপ্রিয় কাহিনী রয়েছে যে, এই ডেজার্ট প্রথম তৈরি হয় ১৯ শতকের শুরুতে। কথিত আছে, কলেজের এক ফুটবল ম্যাচের সময় একটি স্ট্রবেরি প্যাচে খেলোয়াড়রা মেরিংue এবং ক্রিম নিয়ে মিশিয়ে একটি অদ্ভুত কিন্তু সুস্বাদু খাবার তৈরি করেছিলেন। এই খাবারটি পরে কলেজের ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে তাদের বার্ষিক অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হতে শুরু করে। মূলত, এটি একটি সহজ এবং দ্রুত প্রস্তুতযোগ্য ডেজার্ট ছিল, যা কলেজের ছাত্রদের জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয় ছিল। সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ইটন মেস শুধু একটি ডেজার্ট নয়, বরং এটি ব্রিটিশ সংস্কৃতির একটি প্রতীক। এটি বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং বারবিকিউ পার্টিতে পরিবেশন করা হয়। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এর পরিবেশন পদ্ধতি এবং উপাদানগুলি পরিবর্তিত হতে পারে, তবে এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলি অপরিবর্তিত রয়েছে। ইটন মেসের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে রান্নার টেলিভিশন শো এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এটি এখন কেবল একটি কলেজের ঐতিহ্য নয়, বরং সারা বিশ্বে ব্রিটিশ খাবারের জনপ্রিয় একটি অংশ হয়ে উঠেছে। উন্নয়ন ও পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে ইটন মেসের রেসিপি এবং পরিবেশন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে। প্রাচীনকালে এটি মূলত স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি হলেও, আজকাল বিভিন্ন মৌসুমি ফল যেমন ব্লুবেরি, র্যাস্পবেরি, এবং এমনকি কাঁঠালও ব্যবহার করা হয়। ক্রিমের পরিবর্তে কখনও কখনও দই ব্যবহার করা হয়, যা স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ করে, ব্রিটেনের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বিভিন্ন খাবারের উৎসবে ইটন মেসের বিভিন্ন রূপ দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, স্কটল্যান্ডে এর মধ্যে কিছু হুইস্কি যোগ করার রীতি রয়েছে, যা ডেজার্টটিকে একটি নতুন আকার দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্রিটিশ খাবারের জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে ইটন মেসও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পেয়েছে। এটির সরলতা এবং স্বাদ, দুইই বিদেশিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। বর্তমান সময়ে ইটন মেস বর্তমানে, ইটন মেস শুধুমাত্র ইংল্যান্ডের একটি ঐতিহ্যগত খাবার নয়, বরং এটি একটি বিশ্বজনীন ডেজার্টে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন রেস্তোরাঁ এবং ক্যাফে এর বিভিন্ন রকমের সংস্করণ তৈরি করছে। কিছু রেস্তোরাঁতে এটি একটি ফাইন ডাইনিং অভিজ্ঞতার অংশ হিসেবে পরিবেশন করা হয়, যেখানে সৃজনশীলতা এবং উপস্থাপনার উপর জোর দেওয়া হয়। সামাজিক মাধ্যমের প্রভাবে, ইটন মেসের নতুন নতুন রেসিপি এবং পরিবেশনার কৌশলও দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য এটি একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে হাজির হচ্ছে, যেখানে চিনির পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং দই বা বাদাম দুধের ব্যবহার বাড়ছে। উপসংহার ইটন মেসের ইতিহাস আমাদের একটি মিষ্টির গল্প বলার পাশাপাশি ব্রিটিশ সংস্কৃতির একটি অংশ হিসেবে এর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরে। এটি একটি ডেজার্ট, যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে, কিন্তু এর মৌলিক স্বাদ এবং আকর্ষণ আজও অটুট রয়েছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে, যখন মৌসুমি ফলের পূর্ণতা আসে, তখন ইটন মেস তৈরি করা এবং উপভোগ করা একটি আনন্দের বিষয়। এই ডেজার্টের মাধ্যমে আমরা কেবল স্বাদই পায় না বরং এর ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি অংশও উপলব্ধি করতে পারি। ইটন মেস শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, বরং এটি একটি স্মৃতি, একটি ঐতিহ্য, এবং একটি সুমিষ্ট যাত্রার প্রতীক। এর মাধ্যমে আমরা ব্রিটিশ সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী খাবারের একটি দৃষ্টান্ত দেখতে পাই, যা সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে মিশে গেছে।

You may like

Discover local flavors from United Kingdom