brand
Home
>
Malta
>
Valletta
Slide 1
Slide 2
Slide 3
Slide 4

Valletta

Valletta, Malta

Overview

ভালেত্তা: ইতিহাসের সোনালী শহর ভালেত্তা, মাল্টার রাজধানী, একটি বিশেষ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ভরপুর শহর। এটি ইউরোপের সবচেয়ে ছোট রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে একটি, তবে এর ইতিহাস এবং সৌন্দর্য তাৎক্ষণিকভাবে দর্শকদের আকর্ষণ করে। ১৬০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মহান যোদ্ধা অর্ডার অফ সেন্ট জন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, শহরটি একটি দুর্গের মতো পরিকল্পিত এবং এর চারপাশে বিশাল প্রাচীর রয়েছে, যা একসময় শত্রুদের থেকে রক্ষা করতো। শহরের স্থাপত্যশৈলী, বারোক স্টাইলের উদাহরণ, দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।





সাংস্কৃতিক জীবন ভালেত্তা একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে বিভিন্ন ধরনের যাদুঘর, গ্যালারি এবং থিয়েটার রয়েছে। আভা সেন্ট জনস কো-শ্চার্চ এই শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, যা ১৫৮০ সালে নির্মিত এবং এর ভেতরে কারাভাজো দ্বারা চিত্রিত বিখ্যাত "সেন্ট জনের শিরশ্ছেদ" আছে। প্রতি বছর এখানে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসব আয়োজন করা হয়, যেখানে স্থানীয় শিল্পী এবং আন্তর্জাতিক শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন।





শহরের পরিবেশ ভালেত্তার পরিবেশ অত্যন্ত প্রাণবন্ত। শহরের রাস্তাগুলো সরু এবং পাথরের পাঁজরে তৈরি, যেখানে আপনি হাঁটতে হাঁটতে বিভিন্ন দোকান, ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁর মধ্যে দিয়ে যেতে পারবেন। রিপাবলিক স্ট্রিট হল শহরের প্রধান শপিং এলাকা, যেখানে আপনি মাল্টার ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী এবং আধুনিক ফ্যাশন পণ্য কিনতে পারেন। স্থানীয় খাবারের জন্য আপনি মাল্টিজ প্রাইম এবং ফেনিক্স রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন, যেখানে আপনি সুস্বাদু মাল্টিজ খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন।





ইতিহাসবোধ ভালেত্তা শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি ইতিহাসের একটি জীবন্ত পাঠশালা। শহরের চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহ, যেমন দ্য গ্র্যান্ড মাস্টারস প্যালেস, যা একসময় অর্ডার অফ সেন্ট জনের প্রধান কার্যালয় ছিল। আজকাল এটি মাল্টার পার্লামেন্ট এবং রাষ্ট্রপতির সরকারি আবাস। এছাড়া, কাসলেট প্যালেস এবং এস্কেপ প্যালেস এর মতো স্থাপনাগুলোও আপনার দর্শনীয় তালিকায় থাকা উচিত।





স্থানীয় অভিজ্ঞতা ভালেত্তায় এসে স্থানীয় সংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা নিতে ভুলবেন না। শহরের মার্টিনের বাজার এবং ন্যাচারাল হেস্টুরাস এলাকায় ঘুরে দেখুন, যেখানে আপনি স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পাবেন। এছাড়া, শহরের বিভিন্ন কোণে আপনি পাবেন একাধিক ছোট ছোট গ্যালারি যেখানে স্থানীয় শিল্পীদের কাজ প্রদর্শিত হয়। শহরের পরিবেশে একটি বিশেষ মিষ্টি সুবাস রয়েছে, যা স্থানীয় বেকারি থেকে আসা মাল্টিজ পেস্ট্রি এবং অন্যান্য খাবারের জন্য।





ভালেত্তা, তার অনন্য সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং পরিবেশের জন্য একটি অসাধারণ গন্তব্য। এখানে আসলে আপনি কেবল দর্শনীয় স্থানগুলো নয়, বরং শহরের প্রাণ ও বাতাসকেও অনুভব করবেন।

How It Becomes to This

ভ্যালেটার ইতিহাস পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল, যা বিভিন্ন ঐতিহাসিক পর্যায়ে সমৃদ্ধ। এই শহরটি মাল্টার রাজধানী, এবং এটি ১৫৫৬ সালে যোদ্ধা ও শাসক জ্যঁ প্যারিসের নির্দেশনায় নির্মিত হয়। এটি মাল্টার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে একটি, যা ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও স্থানের কেন্দ্রবিন্দু।

প্রাচীনকাল: মাল্টা দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাস শুরু হয় প্রাচীন সময়ে। এখানে প্রথম মানব বসতি স্থাপন হয় ৫০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। প্রাচীন ফিনিশিয়ানরা এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক কার্যকলাপ শুরু করে এবং পরে রোমানরা মাল্টাকে নিজেদের রাজ্যের অংশ হিসাবে গ্রহণ করে। তবে, ভ্যালেটার বিশেষভাবে রোমান শাসনের পর থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র হয়ে ওঠে।

মধ্যযুগ: মধ্যযুগে মাল্টা আরবদের দ্বারা শাসিত হয় এবং ১০৩০ সালের দিকে নর্মানরা দ্বীপটি দখল করে। যদিও ভ্যালেটার তখনো নির্মিত হয়নি, এই সময়ের ইতিহাস শহরের পরবর্তী শাসন ও সংস্কৃতিতে প্রভাব ফেলে। ১২৮৩ সালে মাল্টা সিসিলির রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়, যা শহরের উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

মাল্টিজ নাইটস: ১৫৩০ সালে মাল্টিজ নাইটস দ্বীপটিতে আগমন করে এবং তারা ভ্যালেটা শহরটি প্রতিষ্ঠা করে। শহরটির নামকরণ হয় সেন্ট জনের গ্র্যান্ড মাস্টার জ্যঁ প্যারিসের নামানুসারে। সেন্ট জনের ক্যাথেড্রাল এবং গ্র্যান্ড মাস্টারস প্যালেস এর মতো অসাধারণ স্থাপত্যকর্ম এই সময়ে নির্মিত হয়।

গ্রেট সিজার: ১৬৫০ সালে ভ্যালেটা শহরটি শত্রুদের আক্রমণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। শহরের শক্তিশালী দুর্গগুলি এবং সুরঙ্গগুলি এই সময়ে নির্মিত হয়। ১৭০০ সালের দশকে শহরটি ফরাসি ও ব্রিটিশ শক্তির মধ্যে পালাবদল দেখে।

ব্রিটিশ শাসনকাল: ১৮০০ সালে ব্রিটিশরা মাল্টা দখল করে এবং ভ্যালেটা শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়। এই সময়ে শহরের পরিকাঠামো ও অবকাঠামোর উন্নতি ঘটে। শহরের প্রশস্ত রাস্তা, পার্ক এবং সরকারি ভবন নির্মাণ করা হয়। শহীদ মিনার এবং মাল্টা ন্যাশনাল গ্যালারি এই সময়ে স্থাপন করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: ১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভ্যালেটা শহরটি ব্যাপক বোমাবর্ষণের শিকার হয়। শহরের অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শহরটি পুনর্গঠিত হয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে ওঠে।

আধুনিক সময়: ২০০৪ সালে মাল্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হিসাবে যোগদান করে এবং ভ্যালেটা শহরটি ইউরোপের সাংস্কৃতিক রাজধানী নির্বাচিত হয় ২০১৮ সালে। এই সময়ে শহরের সংস্কৃতি, শিল্প এবং পর্যটন খাত বৃদ্ধি পায়। ভ্যালেটা ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেকচার এবং মাল্টা জাতীয় থিয়েটার সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।

ভ্যালেটার ইতিহাসে প্রতিটি কোণে একটি গল্প লুকিয়ে আছে, যা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়। শহরের দুর্গ, মিউজিয়াম, এবং ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি একেকটি সময়ের সাক্ষ্য বহন করছে।

পর্যটকেরা যখন ভ্যালেটা ভ্রমণ করেন, তখন তারা শহরের প্রাচীন গলিপথগুলোতে হাঁটেন, যেখানে প্রাচীন ইতিহাসের ছাপ স্পষ্ট। বাল্জি প্রাসাদ, পোর্টসান্টো ডেল গ্রান্ড মাস্টারস, এবং সেন্ট এলমো দুর্গ এই অঞ্চলের অন্যতম আকর্ষণ।

ভ্যালেটার সংস্কৃতি ও ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শহরের বাজার, ফেস্টিভাল, এবং স্থানীয় খাবার পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। মাল্টিজ সংস্কৃতির বিশেষত্ব, খাদ্য এবং ঐতিহ্য ভ্যালেটাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

সুতরাং, ভ্যালেটা একটি ঐতিহাসিক শহর যা প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত নানা ঐতিহাসিক ঘটনা ও সংস্কৃতির সাক্ষ্য বহন করে। ইতিহাসের এই নিদর্শনগুলি ভ্রমণকারীদের জন্য এক অমূল্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে, যা তারা কখনো ভুলবেন না।

Historical representation

Discover More Area

Delve into more destinations within this state and uncover hidden gems.