brand
Home
>
Peru
>
Cusco
Slide 1
Slide 2
Slide 3
Slide 4

Cusco

Overview

কুসকো: ইতিহাস ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু কুসকো, পেরুর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর, ইনকা সাম্রাজ্যের প্রাচীন রাজধানী ছিল। এটি দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম প্রাচীন শহর, যার ইতিহাস প্রায় ৩,০০০ বছর পুরনো। শহরটি ইনকা সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত এবং UNESCO বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত। কুসকোর রাস্তাগুলি পাথরের তৈরি, যেখানে ইনকা স্থাপত্যের চিহ্ন স্পষ্ট। শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রধান স্কোয়ার, প্লাজা দে আরমাস, উন্মুক্ত স্থান যেখানে স্থানীয় লোকেরা এবং পর্যটকেরা একত্রিত হয়।



সংস্কৃতি ও উৎসব কুসকো শহরের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এখানে বিভিন্ন রঙে রাঙানো স্থানীয় পোষাক, সঙ্গীত ও নৃত্য দেখতে পাওয়া যায়। শহরের বিভিন্ন উৎসব, যেমন ইনতি রেমি, সূর্য দেবতার উৎসব, পেরুর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সময়ে স্থানীয় লোকেরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে এবং সঙ্গীত ও নৃত্যের মাধ্যমে নিজেদের ঐতিহ্য উদযাপন করে। শহরের মধ্যে নানা শিল্পকলা, যেমন সোনালী সজ্জা, কাঁথা ও মৃৎশিল্প তৈরি হয়, যা স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি হয়।



ঐতিহাসিক স্থানসমূহ কুসকোর চারপাশে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল কোরিকাঞ্চা, যা ইনকা ধর্মের প্রধান মন্দির ছিল। এছাড়াও, সাক্সাইহুয়ামান একটি বিশাল দুর্গ, যা ইনকার নির্মাণশৈলীর একটি চমৎকার উদাহরণ। এই স্থানগুলি কুসকোর সাংস্কৃতিক পরিচয়কে আরো শক্তিশালী করে। শহরের আশেপাশে থাকা মাচু পিচু, ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে পরিচিত ধ্বংসাবশেষ, কুসকো থেকে সহজেই পৌঁছানো যায় এবং এটি একটি অপরিহার্য গন্তব্য।



স্থানীয় খাবার কুসকোর খাবারগুলিও তার সংস্কৃতির একটি অংশ। সেসা দে লস অ্যান্ডেস এবং পাচামাঙ্কা স্থানীয় জনপ্রিয় খাবার, যা অবশ্যই চেষ্টা করা উচিত। এছাড়াও, এখানে কুই (গিনিপিগ) একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে পরিচিত, যা স্থানীয়দের কাছে একটি বিশেষত্ব। শহরের রাস্তায় বিভিন্ন খাবারের দোকান ও রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেখানে আপনি শাকসবজি, সূপ এবং মিষ্টি বিভিন্ন খাবার উপভোগ করতে পারবেন।



স্থানীয় জীবনযাত্রা ও আতিথেয়তা কুসকোর মানুষের আতিথেয়তা বিখ্যাত। স্থানীয়রা অতিথিদের স্বাগত জানাতে সবসময় প্রস্তুত থাকে এবং তাদের সংস্কৃতির অংশীদারিত্ব করতে পছন্দ করে। শহরের বাজারগুলোতে স্থানীয় পণ্যের বিভিন্ন প্রকারের দেখা মেলে, যেখানে পর্যটকরা তাদের জন্য উপহার কিনতে পারেন। প্লাজা দে আরমাস এর আশেপাশে অনেক ক্যাফে ও দোকান রয়েছে, যেখানে আপনি স্থানীয় জীবনযাত্রার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।



প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কুসকো শহরটি পেরুর অ্যান্ডিজ পর্বতের মাঝখানে অবস্থিত, যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তোলে। শহর থেকে কিছু দূরে, ভ্যালি সাকার এর বিস্তীর্ণ প্রান্তর এবং পাহাড়ের দৃশ্য অপরূপ। এই স্থানগুলি স্বর্গীয় পর্যটন অভিজ্ঞতা প্রদান করে এবং ট্রেকিং, সাইক্লিং এবং অন্যান্য অ্যাডভেঞ্চার কার্যকলাপের জন্য আদর্শ। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ কুসকোকে একটি বিশেষ ভ্রমণস্থলে পরিণত করেছে।

How It Becomes to This

কুসকো, পেরুর একটি ঐতিহাসিক শহর, যা ইনকা সাম্রাজ্যের প্রাচীন রাজধানী হিসেবে পরিচিত। এটি চিরকালীন সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের একটি কেন্দ্র, যেখানে প্রতিটি কোণে রয়েছে অতীতের ছোঁয়া। এই শহরটি ভ্রমণকারীদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ, যেখানে আপনি প্রাচীন স্থাপত্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং breathtaking প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে পরিচিত হতে পারবেন।

ইনকা সাম্রাজ্য (১৫০০ এর আগে): কুসকোর ইতিহাস শুরু হয় ইনকা সাম্রাজ্যের উত্থানের সাথে। ইনকা জনগণ কুসকোকে তাদের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং এটি দ্রুত একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কুরিকোচা (সান ব্লাস) এবং প্লাজা দে আর্মাস এর মতো স্থানগুলোর মাধ্যমে আপনি এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের একটি অনুভূতি পেতে পারেন। ইনকা স্থাপত্যের অসাধারণ নিদর্শনগুলো, যেমন কোরিকোচা মন্দির, ইনকা সভ্যতার অগ্রগতির সাক্ষ্য দেয়।



স্প্যানিশ উপনিবেশ (১৫৩২-১৮২১): ১৬শ শতকের শুরুতে স্প্যানিশ উপনিবেশের আগমনের ফলে কুসকোতে পরিবর্তনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। ফ্রান্সিসকো পিজারো ইনকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শহরটি দখল করেন এবং এখানে স্প্যানিশ স্থাপত্যের প্রভাব পড়তে শুরু করে। স্প্যানিশ ক্যাথেড্রাল এবং সান ব্লাস গির্জা এর মতো গির্জাগুলো এই সময়ের সাক্ষ্য দেয়। এই স্থাপনাগুলোতে আপনি স্প্যানিশ স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য এবং ইনকা শৈলির একটি সুন্দর মিলন দেখতে পাবেন।



স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৮০০ এর দশক): ১৯শ শতকের প্রথমার্ধে কুসকো স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি কেন্দ্র হয়ে ওঠে। ১৮১৪ সালে, হোসে ডি সান মার্টিন নেতৃত্বে একটি বিপ্লব শুরু হয়, যা পরবর্তীতে পেরুর স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যায়। এই সময়ের ঐতিহাসিক স্থানগুলো যেমন কুসকো মিউজিয়াম এবং আর্কেওলজিক্যাল মিউজিয়াম, ভ্রমণকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।



২০শ শতক এবং সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ (১৯০০-২০০০): কুসকো ২০শ শতকে আধুনিকীকরণের সাক্ষী হয়, কিন্তু এর ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখে। ইনকান রাস্তা এবং মাচু পিচুর যাত্রা শুরু হওয়ার পর কুসকো পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে ওঠে। শহরটি সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে, যেখানে স্থানীয় শিল্প এবং সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে। কুসকোর রাস্তাগুলোতে আপনারা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব যেমন ইনটির রাইমি এবং সান পেড্রো উৎসব দেখতে পাবেন, যা স্থানীয় মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।



বর্তমান কুসকো (২০০০-বর্তমান): আজকের কুসকো একটি বৈচিত্র্যময় শহর, যা প্রাচীন ইতিহাস এবং আধুনিকতার মিশ্রণে গঠিত। শহরটি UNESCO বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত, এবং এখানে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক আসেন। প্লাজা দে আর্মাস এবং সান ব্লাস এর আশেপাশে অনেক ক্যাফে, হোটেল এবং দোকান রয়েছে, যেখানে আপনি স্থানীয় খাবার এবং হস্তশিল্প উপভোগ করতে পারেন। কুসকোতে ভ্রমণের সময় স্থানীয় বাজারগুলো থেকে অল্টিপ্লানো শীতল এবং পেরুভিয়ান স্যুপ এর মতো বিশেষ খাবার উপভোগ করতে ভুলবেন না।



কুসকো শহরের প্রতিটি কোণে ইতিহাসের এক একটি অধ্যায় লুকিয়ে আছে। এখানে ভ্রমণ করে আপনি না শুধু প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবেন, বরং স্থানীয় সংস্কৃতির প্রাণবন্ততা এবং ঐতিহ্যও অনুভব করতে পারবেন। কুসকোর গলিগুলোতে হাঁটলে, ইনকা সাম্রাজ্যের গৌরবময় অতীত এবং স্প্যানিশ উপনিবেশের ইতিহাস আপনার সঙ্গে থাকবে, যা আপনার ভ্রমণকে স্মরণীয় করে তুলবে।

Historical representation

Discover More Area

Delve into more destinations within this state and uncover hidden gems.