brand
Home
>
Thailand
>
Prachin Buri
Slide 1
Slide 2
Slide 3
Slide 4

Prachin Buri

Prachin Buri, Thailand

Overview

প্রাচীন বুরী: সংস্কৃতি ও পরিবেশ প্রাচীন বুরী, থাইল্যান্ডের একটি ছোট কিন্তু ঐতিহ্যবাহী শহর, যা চমৎকার প্রকৃতি এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এই শহরটি চেনাবুডা নদীর কাছাকাছি অবস্থিত এবং এটি থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। শহরের পরিবেশ শান্ত এবং স্বাভাবিক, যেখানে স্থানীয় জনসংখ্যার জীবনধারা এখনও প্রথাগত এবং তাদের প্রতিদিনের কার্যকলাপের মধ্যে স্থানীয় সংস্কৃতি প্রতিফলিত হয়।





ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রাচীন বুরীর ইতিহাস প্রাচীন সময় থেকে শুরু হয়ে বর্তমান পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি ছিল সিয়াম রাজ্যের (বর্তমান থাইল্যান্ড) একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আপনি দেখতে পাবেন প্রাচীন মন্দিরগুলি, যেমন ওয়াট প্রাচিনবুরী, যা ১৮শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এই মন্দিরে থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহ্য এবং স্থাপত্যশৈলী দর্শকদের মুগ্ধ করবে। এছাড়াও, শহরের চারপাশে প্রচুর পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনাও রয়েছে, যা স্থানীয় ইতিহাসের গভীরতা বোঝাতে সহায়ক।





স্থানীয় বৈশিষ্ট্য এবং খাদ্য প্রাচীন বুরীর স্থানীয় খাদ্য একটি বিশেষ আকর্ষণ। এখানে আপনি পাবেন বিভিন্ন ধরনের থাই খাবার, যেমন পাড থাই, সোম টাম, এবং স্থানীয় বিশেষত্ব হিসেবে নুয়াং নুয়াং। শহরের বাজারে ঘুরে দেখলে আপনি তাজা ফলমূল ও সবজির পাশাপাশি স্থানীয় হস্তশিল্পও কিনতে পারবেন। বিশেষ করে, প্রাচীন বুরীর বাজারে স্থানীয় কৃষকের তাজা পণ্য এবং সুস্বাদু রাস্তায় খাবারগুলি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়।





প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রাচীন বুরী শুধুমাত্র ঐতিহাসিক স্থান নয়, বরং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও পরিচিত। শহরের চারপাশে বিস্তৃত সবুজ বন, পাহাড় এবং নদী রয়েছে যা ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। কাও ইয়াই জাতীয় উদ্যান, যা শহরের নিকটবর্তী, সেখানে ভ্রমণ করে আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। এই জাতীয় উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদ দেখা যায়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গ।





সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রাচীন বুরীতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় throughout the year, যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার একটি অংশ। চন্দ্র মাসের উৎসব এবং বৌদ্ধ পূর্ণিমা এই শহরের অন্যতম জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। এই সময়ে স্থানীয় মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে শহরের কেন্দ্রে জড়ো হয় এবং নৃত্য ও সঙ্গীতের মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতিকে উদযাপন করে। পর্যটকরা এই ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাইল্যান্ডের সংস্কৃতির গভীরতা এবং বৈচিত্র্য উপলব্ধি করতে পারেন।





প্রাচীন বুরী একটি অনন্য গন্তব্য, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একত্রিত রূপ দেখা যায়। এটি থাইল্যান্ডের একটি অজানা রত্ন, যা বিদেশী ভ্রমণকারীদের জন্য একটি নতুন এবং চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

How It Becomes to This

প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত, প্রাচীনบุรี (Prachin Buri) থাইল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ যা ইতিহাসের নানা অধ্যায়ের সাক্ষী। এই অঞ্চলটি প্রাচীন সিভিলাইজেশন, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এখানে আসার মাধ্যমে আপনি থাইল্যান্ডের ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায়ে প্রবেশ করতে পারবেন।



প্রাচীন সময়ে, প্রাচীনบุรี ছিল খмер সাম্রাজ্যের অংশ। এখানে অবস্থিত প্রাচীন খমের মন্দিরগুলি দেশের ইতিহাসের এক অনন্য চিত্র তুলে ধরে। বিশেষ করে, প্রাচীন শহর নং কায় (Nong Khai) এবং মন্দির প্রাচীন গুহা (Prasat Nakhon Luang) দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। এই স্থাপনাগুলো খমের স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন।



১৩ শতকের দিকে, থাইল্যান্ডের সুকোথাই রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হলে প্রাচীনบุรี তার রাজনৈতিক গুরুত্ব হারাতে থাকে। তবে, এখানকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় ছিল। সুখোথাইয়ের স্থাপত্যশৈলী এখানে দৃশ্যমান, যা স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করেছে।



১৬ শতকে, থাইল্যান্ডের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হয়। আয়ুধ্যায়া রাজ্য প্রতিষ্ঠার ফলে প্রাচীনบุรี আবারও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই সময়ে, প্রাচীনবুরির বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। বাড়ন চা (Baan Chan) গ্রামটি সেই সময়ের একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল।



১৭ শতকের শেষের দিকে, প্রাচীনบุรีতে আসা ইউরোপীয় ভ্রমণকারীরা এই অঞ্চলের সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন। পোর্ট ডি প্রাচীন (Port de Prachin) নামে পরিচিত বন্দরটি তখনকার সময়ে বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল এবং এখানকার পণ্যগুলো ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য অংশে রপ্তানি হতো।



যখন ১৭৮২ সালে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন প্রাচীনบุรี একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রাচীনบุรี প্রাদেশিক কেন্দ্র (Prachin Buri Provincial Center) প্রতিষ্ঠা করে স্থানীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।



বিশেষ করে, ১৯শ শতকের শেষের দিকে এবং ২০শ শতকের শুরুতে প্রাচীনবুরি শিল্পের উন্নতি ঘটে। কাঁধের শিল্প (Shoulder Art) ও মাটির জিনিসপত্র (Clay Crafts) এই সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। স্থানীয় শিল্পীরা তাদের কাজের মাধ্যমে ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে উঠেছিলেন।



বর্তমানে, প্রাচীনবুরি একটি শান্তিপূর্ণ শহর, যেখানে ইতিহাস ও সংস্কৃতির মিশ্রণ দেখা যায়। প্রাচীনবুরি ইতিহাস মিউজিয়াম (Prachin Buri History Museum) এখানে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত, যা এই অঞ্চলের ইতিহাসের নানা দিক তুলে ধরে।



এছাড়াও, পাহাড় ও প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করতে চাইলে কাচান পাস (Kachan Pass) এবং পান থাম্বন (Pang Tham Ban) দর্শনের জন্য উপযুক্ত স্থান। এখানে হাইকিং, ক্যাম্পিং এবং প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর সুযোগ রয়েছে।



প্রাচীনবুরির খাবার সংস্কৃতি ভ্রমণকারীদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ। প্রাচীনবুরি রেসিপি (Prachin Buri Recipes) স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায়। বিশেষ করে, লাপ লম (Lap Lum) এবং পাক পাং (Pak Pang) খাবারগুলি স্থানীয়দের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। এই খাবারগুলোর স্বাদ নিতে আপনি স্থানীয় রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন।



শেষ পর্যন্ত, প্রাচীনবুরি একটি অসাধারণ ভ্রমণস্থল, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিশ্রণ রয়েছে। এটি থাইল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা দেশটির ইতিহাসের অমূল্য সম্পদ। এখানে এসে আপনি শুধু একটি শহর নয়, বরং একটি পূর্ণ ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারবেন।

Historical representation