brand
Home
>
Mexico
>
Ciudad de México
Slide 1
Slide 2
Slide 3
Slide 4

Ciudad de México

Ciudad de México, Mexico

Overview

সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সিউদাদ দে মেক্সিকো বা মেক্সিকো সিটি, লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় ও প্রাণবন্ত শহরগুলোর একটি। এটি একটি সাংস্কৃতিক হাব যেখানে প্রাচীন ঐতিহ্য এবং আধুনিক জীবনযাত্রার মিশ্রণ ঘটেছে। শহরের প্রতিটি কোণে আপনি পাবেন শিল্পকলা, সংগীত এবং খাদ্য সংস্কৃতির নান্দনিক উদাহরণ। এখানে রয়েছে অসংখ্য জাদুঘর, গ্যালারি এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যেমন মিউজিও ন্যাশিওনাল দে অ্যান্থ্রোপলজিয়া, যা প্রাচীন মেক্সিকোর সভ্যতার ইতিহাস তুলে ধরে।





ঐতিহাসিক গুরুত্ব মেক্সিকো সিটি একটি ঐতিহাসিক শহর, যার ইতিহাস প্রায় ৭০০ বছর পুরনো। এটি টেনোচটিটলান নামক অ্যাজটেক সভ্যতার রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত জোকালো বা প্রধান চত্বরে আপনি দেখতে পাবেন স্প্যানিশ উপনিবেশের বিশাল প্রভাব, যা আজও এখানে অনুভূত হয়। ক্যাথেড্রাল মেট্রোপলিটানা এর গথিক স্থাপত্য এবং টেমপ্লো মেয়র এর ধ্বংসাবশেষ এই ঐতিহাসিক শহরের গৌরবকে আরও বাড়িয়ে তোলে।





স্থানীয় জীবনযাত্রা মেক্সিকো সিটির জীবনযাত্রা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। এখানে আপনি পাবেন রঙিন বাজার, যেমন মার্কাডো ডি সান জুয়ান, যেখানে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফল ও শাকসবজি বিক্রি করেন। খাবারের জন্য, শহরটি বিখ্যাত ট্যাকো, এনচিলাদাস, এবং মোল এর জন্য। স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোর বৈচিত্র্যময় মেনু স্যুভেনির থেকে বেশি কিছু।





বিনোদন এবং রাত্রিকালীন জীবন মেক্সিকো সিটির রাতের জীবনও এক অনন্য অভিজ্ঞতা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় লাইভ মিউজিক, নৃত্য এবং থিয়েটার উপভোগ করতে পারেন। পলাঞ্জা ডেল কারমেন এবং কন্ডেসা অঞ্চলে অনেকগুলি বারে এবং ক্লাবে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক শিল্পীদের পারফরম্যান্স হয়।





প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শহরের কেন্দ্রের অদূরে, চাপুলটেপেক পার্ক একটি বিশাল ও সবুজ এলাকা যেখানে আপনি বিশ্রাম নিতে পারেন এবং শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে থাকতে পারেন। এখানে রয়েছে বিভিন্ন জাদুঘর, একটি প্রাচীন প্রাসাদ এবং একটি চিড়িয়াখানা।





পর্যটন স্পট মেক্সিকো সিটিতে দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ফ্রিদা কাহলো মিউজিয়াম অন্যতম, যা বিখ্যাত শিল্পীর জীবন ও কাজকে তুলে ধরে। এছাড়া, টোলটেকসটিওটিহুয়াকান এর প্রাচীন স্থাপত্য দর্শন করার জন্য জনপ্রিয় স্থান।





মেক্সিকো সিটি একটি জাদুকরী স্থানে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রাচীন ও আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটেছে। এই শহরের মধ্যে দিয়ে হাঁটলে আপনি এক নতুন সংস্কৃতি ও ইতিহাসের স্বাদ পাবেন।

How It Becomes to This

সিআদাদ দে মেক্সিকো, বা মেক্সিকো সিটি, ইতিহাসের একটি সমৃদ্ধ পটভূমি তৈরি করেছে যা প্রাচীন সভ্যতা থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে ভ্রমণকারীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের দিক তুলে ধরা হলো।

আজটেক সভ্যতা থেকে শুরু করা যাক। ১৪ই শতকে, আজটেকরা তেনোচিতলান নামক একটি দ্বীপে একটি শহর প্রতিষ্ঠা করে। এটি ছিল একটি অসাধারণ স্থাপত্য এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আজটেকদের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তেনোচিতলান আজকের সিআদাদ দে মেক্সিকোর স্থানে অবস্থিত এবং এখানে এখন তেম্পলো মেয়র নামে একটি প্রাচীন মন্দিরের অবশিষ্টাংশ দেখা যায়।

১৪৯২ সালে যখন ক্রিস্টোফার কোলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেন, তখন আজটেকরা তাদের সোনালী যুগে ছিল। কিন্তু ১৫২১ সালে স্প্যানিশ conquistador এর্নান কোর্তেস শহরটি দখল করে নেয়, যা আজটেক সভ্যতার পতনের সূচনা করে। এই ঘটনাটি মেক্সিকোর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সিআদাদ দে মেক্সিকোর কেন্দ্রে অবস্থিত প্লাজা মায়োর এখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও উৎসবের স্থান।

স্প্যানিশ শাসনে, নগরটি নতুন নাম পায় - মেক্সিকো সিটি। এখানে গঠিত হয় ইউরোপীয় স্থাপত্যের চিহ্ন, যা আজও দর্শকদের মুগ্ধ করে। মেট্রোপলিটান ক্যাথেড্রাল এবং প্যালাসিও ন্যাশিওনাল এর নির্মাণ এই সময়ের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

নবম শতাব্দীতে সিআদাদ দে মেক্সিকোতে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়। মিগুয়েল হিদালগো ১৮১০ সালে স্বাধীনতার প্রথম ডাক দেন। এই আন্দোলনের ফলে স্পেনীয়দের বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধ চলে যা ১৮২১ সালে মেক্সিকোর স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের স্থান হিসেবে জোকালো (প্লাজা মায়োর) একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

১৮৬৪ সালে, ম্যাক্সিমিলিয়ান নামে একজন অস্ট্রিয়ান সম্রাট মেক্সিকো শাসন করতে আসেন, কিন্তু তিনি ১৮৬৭ সালে মেক্সিকো সিটির কাছে হার মানেন। ম্যাক্সিমিলিয়ানের শাসনকাল মেক্সিকোর ইতিহাসে একটি অদ্ভুত অধ্যায়। তার শাসনের সময় নির্মিত চাপুলতেপেক ক্যাসল আজ একটি ইতিহাসের নিদর্শন।

২০শ শতকের শুরুতে, মেক্সিকো একটি বিপ্লবের সম্মুখীন হয়। মেক্সিকান বিপ্লব, যা ১৯১০ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল, মেক্সিকোর সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোকে পরিবর্তন করে। এই বিপ্লবের ফলে মেক্সিকো শহরের জাতীয় প্যালেস এর অভ্যন্তরে বিভিন্ন শিল্পকর্ম তৈরি হয়, যা বিপ্লবের চিত্র তুলে ধরে।

২০শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, সিআদাদ দে মেক্সিকো দ্রুত আধুনিকায়নের পথে এগিয়ে যেতে শুরু করে। মেট্রো সিস্টেম নির্মাণ করা হয়, যা শহরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে বিপ্লবিত করে। আধুনিক স্থাপত্যের উদাহরণ হিসেবে টাওয়ার ল্যাটিনোআমেরিকানা উল্লেখযোগ্য, যা শহরের একটি প্রধান চিহ্ন হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে, সিআদাদ দে মেক্সিকো একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। শহরের বিভিন্ন অংশে, ফ্রিদা কাহলো মিউজিয়াম এবং সান অ্যাঙ্গেলো মার্কেট এর মতো স্থানগুলি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। শহরের খাদ্য সংস্কৃতি, যেমন টাকো এবং এনচিলাডা, ভ্রমণকারীদের জন্য একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

শহরের ইতিহাসের প্রতিটি স্তর ভ্রমণকারীদের জন্য আকর্ষণীয় গল্প নিয়ে আসে। প্রাচীন আজটেক সভ্যতার থেকে শুরু করে আধুনিক মেক্সিকো সিটির সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন, এখানে প্রতিটি কোণে ইতিহাসের গন্ধ পাওয়া যায়। ভ্রমণকারীরা যখন সিআদাদ দে মেক্সিকোতে আসেন, তখন তারা শুধু একটি শহরই নয়, বরং একটি সভ্যতার ইতিহাসের সাক্ষী হন।

বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব, যেমন ডে অফ দ্য ডেড, শহরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উদযাপন করে। এই উৎসবের সময়, নগরীর প্রতিটি কোণে রঙিন আলোকসজ্জা এবং উৎসবের আনন্দ দেখা যায়।

সিআদাদ দে মেক্সিকোতে ভ্রমণের সময়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির মিশ্রণের সাথে সাথে আধুনিক জীবনের চিত্রও দেখতে পাবেন। এটি একটি শহর যেখানে অতীত ও বর্তমানের সংযোগ ঘটে, এবং প্রতিটি ভ্রমণকারী এখানে নিজেদের একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা লাভ করেন।

Historical representation