brand
Home
>
Sri Lanka
>
Kandy District
Slide 1
Slide 2
Slide 3
Slide 4

Kandy District

Kandy District, Sri Lanka

Overview

ক্যান্ডি জেলা শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি অনন্য জেলা যা তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। ক্যান্ডির মূল শহর, যা একই নামের সাথে পরিচিত, দেশটির প্রাচীন রাজধানী ছিল এবং এটি পাল্লব ও রাজা শ্রীবিক্রম রাজাসিংহের সময়কাল থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ক্যান্ডির শহর কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত দালাদা মালিগাওয়া, যা বুদ্ধের একটি পবিত্র দাঁত সংরক্ষণ করে, তা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।





এই জেলার সংস্কৃতিতে একটি গভীর ধর্মীয় অনুভূতি রয়েছে, যা বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে অঙ্গীভূত। ক্যান্ডির বাসিন্দারা ধর্মীয় উৎসবগুলি উদযাপন করে যেমন এসালা পেরহেরা, যেখানে বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতীক এবং ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের মাধ্যমে শহরের রাস্তায় বর্ণিল প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবটি প্রতি বছর আগস্টে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি শ্রীলঙ্কার অন্যতম বৃহৎ এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় উৎসবগুলির মধ্যে একটি।





ক্যান্ডির পরিবেশও অত্যন্ত মনোরম, যেখানে পাহাড়ি অঞ্চলের সৌন্দর্য এবং সবুজ প্রকৃতি মিশে আছে। ক্যান্ডি লেক শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত, যা একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রদান করে এবং স্থানীয়দের কাছে একটি জনপ্রিয় প্রশান্তির স্থান। পর্যটকরা এখানে নৌকা চালানো, হাঁটাহাঁটি করা এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। ক্যান্ডি জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য হান্দনাগালা এবং পাল্লুক্কালে এর মতো স্থানগুলি দর্শন করতে পারেন।





ক্যান্ডি জেলার আরেকটি বিশেষত্ব হল এর স্থানীয় শিল্প ও কারুশিল্প। এখানে পেরাহেরা মাস্কস এবং বুদ্ধ মূর্তি তৈরির জন্য বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। স্থানীয় বাজারগুলোতে এই সব শিল্পকর্মের প্রদর্শন এবং বিক্রয় ঘটে, যা পর্যটকদের জন্য স্মৃতি হিসেবে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদর্শ। এছাড়াও, ক্যান্ডির চা বাগানগুলি বিখ্যাত এবং পর্যটকরা এখানে চা সংগ্রহের প্রক্রিয়া দেখার এবং স্থানীয় চা উপভোগের সুযোগ পান।





অতএব, ক্যান্ডি জেলা একটি অনন্য সমন্বয় যা ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রকৃতি এবং স্থানীয় জীবনের একটি চিত্র তুলে ধরে। এই জেলার প্রতিটি কোণে একটি গল্প রয়েছে, যা শ্রীলঙ্কার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। ক্যান্ডির সফর আপনার শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।

How It Becomes to This

ক্যান্ডি জেলা, শ্রীলঙ্কার একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যা প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্ব বহন করে। এটি দেশের মধ্যভাগে অবস্থিত এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ইতিহাস ভ্রমণকারীদের জন্য একটি চমৎকার গন্তব্য।

প্রাচীন কাল থেকে ক্যান্ডি অঞ্চলের ইতিহাস শুরু হয়, যখন এটি বিভিন্ন রাজ্যের অধীনে ছিল। এই অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতা বিশেষভাবে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রাচীন বৌদ্ধ স্থাপত্য এবং শিল্পকলা আজও এখানে দেখা যায়।

দ্বাদশ শতাব্দী থেকে ক্যান্ডি একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই সময়ে, ক্যান্ডির রাজারা তাদের রাজত্বকে শক্তিশালী করতে এবং শ্রীলঙ্কার অন্যান্য অংশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ক্যান্ডির রাজত্বের ইতিহাসে রাজা ভিক্ষু এবং রাজা বিক্রমাবাহু এর মতো কিংবদন্তীতূল্য রাজাদের নাম উল্লেখযোগ্য।

১৫শ শতাব্দী থেকে ক্যান্ডি ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই সময়, পোর্টুগিজ এবং পরে ডাচদের সঙ্গে ক্যান্ডির রাজাদের সংঘর্ষ হয়। ক্যান্ডির রাজা শ্রী বিক্রমারাজা এই সময়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেন এবং ক্যান্ডি অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলেন।

১৭৮২ সালে গঠিত ক্যান্ডির রাজ্যটি শ্রীলঙ্কার সর্বশেষ স্বাধীন রাজ্য ছিল। ১৮০৩ সালে ব্রিটিশদের দ্বারা রাজ্যের পতন ঘটে, যা ক্যান্ডির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। ক্যান্ডি শহরে দালাদা মালিগাওয়া বা পবিত্র দাঁতের মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আজও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান।

ব্রিটিশ শাসনকাল চলাকালীন, ক্যান্ডি অঞ্চলে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হয়। রেলপথ, সড়ক এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ক্যান্ডি শহরকে আরো উন্নত করা হয়। এই সময়ে ক্যান্ডির চা বাগানগুলি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করে।

১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা অর্জন করে। ক্যান্ডি জেলা তখন থেকেই দেশের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে তার গুরুত্ব বজায় রেখে চলেছে। ক্যান্ডি পেরাহেরা, যা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়, বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি অনন্য উদাহরণ।

বর্তমানে, ক্যান্ডি জেলা বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃত একটি স্থান। এখানে দালাদা মালিগাওয়া, ক্যান্ডি লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং ক্যান্ডি মিউজিয়াম এর মতো স্থলগুলির জন্য পর্যটকদের আগমন ঘটে।

ক্যান্ডি লেক শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত, যেখানে ভ্রমণকারীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হাঁটতে পারেন। এই লেকের চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

ক্যান্ডি মিউজিয়াম এখানে ক্যান্ডির ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। এটি পর্যটকদের ক্যান্ডির সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাথে পরিচিত হতে সাহায্য করে।

ক্যান্ডির স্থানীয় খাবারও একটি আলাদা আকর্ষণ। ক্যান্ডি বেকড রাইস এবং ওল্ড ক্যান্ডি রেসিপি পর্যটকদের জন্য একটি gastronomic অভিজ্ঞতা। স্থানীয় বাজারে শাকসবজি, মশলা এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের বৈচিত্র্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

ক্যান্ডি পেরাহেরা হল একটি মহান ধর্মীয় উৎসব, যা প্রতি বছর জুলাই-আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়, ক্যান্ডির রাস্তাগুলি রঙিন সাজসজ্জা, নৃত্য এবং বাদ্যযন্ত্রে পূর্ণ হয়ে যায়। এটি স্থানীয় সংস্কৃতির একটি জীবন্ত উদাহরণ।

ভ্রমণকারীরা ক্যান্ডি জেলার প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার জন্য হান্থানা পাহাড় এবং মাহাওয়েলি নদী এর সুন্দর পরিবেশে যেতে পারেন। এগুলি প্রকৃতির প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান।

বর্তমান সময়ে, ক্যান্ডি জেলা তার ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার মিশ্রণ নিয়ে ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। এখানকার ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। ক্যান্ডির প্রতিটি কোণে ইতিহাসের ছোঁয়া আছে, যা দর্শনীয় এবং স্মরণীয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

Historical representation

Discover More Area

Delve into more destinations within this state and uncover hidden gems.