brand
Home
>
United Kingdom
>
Ascension Island
Slide 1
Slide 2
Slide 3
Slide 4

Ascension Island

Ascension Island, United Kingdom

Overview

অ্যাসেনশন দ্বীপের ভূগোল ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অ্যাসেনশন দ্বীপ দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের একটি ছোট্ট দ্বীপ, যা ব্রিটিশ অধিকৃত। এটি ব্রাজিলের উপকূল থেকে প্রায় ১,৬০০ কিমি এবং আফ্রিকার উপকূল থেকে ১,৩০০ কিমি দূরে অবস্থিত। দ্বীপটির আকার ত্রিভুজাকৃতির এবং এর মোট আয়তন প্রায় ৮৫ বর্গ কিমি। এখানে রয়েছে উঁচু পর্বত শৃঙ্গ এবং বিস্তীর্ণ সৈকত। প্রাকৃতিক পরিবেশে উষ্ণ জলবায়ু এবং সুন্দর সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে, যা পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়।





ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অ্যাসেনশন দ্বীপের ইতিহাস ১৮১৫ সালের দিকে শুরু হয়, যখন এটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। এই সময় থেকেই দ্বীপটি একটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, এই দ্বীপটি একটি গুরুত্বপূর্ণ στρατηγিক স্থানে পরিণত হয়, যেখানে সামরিক বাহিনী অবস্থান করে এবং বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। ১৯৪৫ সালে, এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, যা পরবর্তীতে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছিল।





স্থানীয় সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা অ্যাসেনশন দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় ৭০০ জন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ব্রিটিশ নাগরিক। এখানকার সংস্কৃতি মূলত ব্রিটিশ প্রভাবিত, তবে স্থানীয় আদিবাসী জনগণের কিছু প্রথা ও রীতিনীতিও রয়েছে। দ্বীপে ইংরেজি ভাষা প্রচলিত, এবং সেখানকার মানুষজন সাধারণত অতিথিপরায়ণ এবং সদয়। স্থানীয় খাবারে সমুদ্রের মাছ এবং শাকসবজির ব্যবহার বেশি হয়। দ্বীপের বিশেষ খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে মাছের স্ট্যু এবং ককটেল।





ক্রীড়া ও বিনোদন অ্যাসেনশন দ্বীপকে ঘিরে রয়েছে অনেক ধরনের ক্রীড়া এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম। এখানে ট্রেকিং, ডাইভিং এবং স্নরকেলিংয়ের সুযোগ আছে, যা পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। এছাড়া, দ্বীপের চারপাশে প্রচুর সামুদ্রিক জীবন দেখা যায়, যা মৎস্য শিকারের জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ স্থান। কিছু স্থানীয় উৎসবও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সঙ্গীত, নাচ এবং খাদ্যের মাধ্যমে স্থানীয় সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যায়।





পর্যটন আকর্ষণ অ্যাসেনশন দ্বীপের কিছু বিশেষ দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যার মধ্যে প্রধান হলো 'লং বিচ', যা তার সাদা বালির সৈকত এবং স্বচ্ছ জলের জন্য পরিচিত। এছাড়া, 'ডেভিলস অ্যাপল' নামে পরিচিত একটি স্থান রয়েছে, যা একটি প্রাকৃতিক পাথরের গঠন এবং দর্শকদের জন্য একটি অনন্য ছবি তোলার সুযোগ দেয়। 'স্যাটেলাইট স্টেশন'ও একটি আকর্ষণীয় স্থান, যেখানে পর্যটকরা আধুনিক প্রযুক্তির কিছু দৃষ্টান্ত দেখতে পারেন।





অ্যাসেনশন দ্বীপের ভ্রমণ একটি অনন্য অভিজ্ঞতা, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমন্বয় ঘটে। এটি একটি শান্তিপূর্ণ স্থান, যেখানে পর্যটকরা প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে পারেন এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারেন।

How It Becomes to This

এখন আমরা অ্যাসেনশন দ্বীপের ইতিহাসের দিকে নজর দেব, যা যুক্তরাজ্যের একটি বিশেষ অঞ্চল। এই দ্বীপটি আটলান্টিক মহাসাগরের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং এর ইতিহাসে রয়েছে অনেক রোমাঞ্চকর ঘটনা।

প্রাচীনকাল থেকেই অ্যাসেনশন দ্বীপের প্রতি মানুষের আগ্রহ ছিল। তবে এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৫৩৩ সালে, যখন পর্তুগিজ নাবিকরা এটি দেখতে পান। তারা দ্বীপটিকে "অ্যাসেনশন" অর্থাৎ "উদ্ভব" নামকরণ করেন, কারণ এটি ক্রিসমাসের দিন আবিষ্কৃত হয়। এই সময় থেকেই দ্বীপটির গুরুত্ব শুরু হয়, যদিও তখন এটি জনবসতিহীন ছিল।

১৮০১ সালে, ব্রিটিশ সরকার দ্বীপটিকে একটি সামরিক স্টেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। ডেভনশায়ার বে এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই স্থানটি নৌবাহিনীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রিফুজি হিসেবে কাজ করেছিল।

১৯শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, দ্বীপটিতে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়। এখানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী একটি গ্যাসোলিন এবং টেলিগ্রাফ স্টেশন স্থাপন করে। অ্যাসেনশন দ্বীপের বিমানবন্দর ১৯৪২ সালে নির্মিত হয়, যা দ্বীপটিকে সামরিক কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল হিসেবে গড়ে তোলে।

দ্বীপটির ভূগোল এবং জলবায়ু এটি একটি বিশেষ স্থান করে তুলেছে। এখানে রয়েছে শুষ্ক আবহাওয়া, যা কৃষিকাজের জন্য উপযোগী নয়। তবে, দ্বীপের শ্রীমন্ত প্রকৃতি এবং বিশেষ প্রজাতির পাখির বাসস্থান হিসেবে এটি পরিচিত। ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন এখানে পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।

দ্বীপটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি হয়ে ওঠে। লং পয়েন্ট থেকে শুরু করে, এখানে বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি নির্মিত হয়, যা যুদ্ধকালীন সময়ে ব্রিটিশ বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যুদ্ধ শেষে, দ্বীপটির অর্থনীতি মূলত সামরিক কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল ছিল।

১৯৬০-এর দশকে, অ্যাসেনশন দ্বীপটি পুনরায় গুরুত্ব পায় যখন যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায়, ওয়ারিংটন স্টেশন নির্মাণ করা হয়, যা মার্কিন মহাকাশ কর্মসূচির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।

বর্তমানে, অ্যাসেনশন দ্বীপটি একটি নির্জন পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। এখানে আসা পর্যটকরা দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, যেমন ওয়েস্ট ক্লিফস এবং অ্যাসেনশন স্কয়ার। স্থানীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগও রয়েছে।

দ্বীপের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে বর্তমানে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অ্যাসেনশন দ্বীপের জাতীয় পার্ক এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যা দ্বীপের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে সহায়তা করছে।

অ্যাসেনশন দ্বীপের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে। দ্বীপের প্রত্যেক কোণে রয়েছে ইতিহাসের গন্ধ, যা আপনাকে অতীতের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।

এখানে আসা পর্যটকরা শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দৃশ্যই উপভোগ করবেন না, বরং দ্বীপের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অংশ হতে পারবেন। স্থানীয় জনগণের আতিথেয়তা এবং সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।

অ্যাসেনশন দ্বীপের বিশেষত্ব হচ্ছে এর বিচিত্রতা। এটি একটি সামরিক ইতিহাসের কেন্দ্র, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের গন্তব্য এবং একটি গবেষণা কেন্দ্র। ইতিহাসের প্রতিটি স্তরে পর্যটকরা নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন।

দ্বীপটিতে সমুদ্রের তীরে হাঁটা, স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণ, এবং ইতিহাসের প্রতীক জেনারেল সিএনসাল্ট পরিদর্শন করা, সবকিছুতেই রয়েছে বিশেষত্ব।

তাহলে, অ্যাসেনশন দ্বীপে আসা মানে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করা। এখানকার প্রতিটি স্থান আপনাকে নতুন অভিজ্ঞতার দরজা খুলে দেবে।

Historical representation