brand
Home
>
Foods
>
Yakiniku (焼肉)

Yakiniku

Food Image
Food Image

জাপানের '焼肉' বা 'ইয়াকিনিকু' একটি জনপ্রিয় খাবার যা মূলত মাংসের ভাজা খাওয়ার একটি বিশেষ পদ্ধতি। এই খাবারটি জাপানি সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এবং এটি বিভিন্ন ধরনের মাংস, বিশেষ করে গরুর মাংস, শূকর এবং মুরগির মাংসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। ইয়াকিনিকুর উৎপত্তি ১৯শ শতকের শেষভাগে, যখন জাপানে পশ্চিমা খাবার গ্রহণের প্রবণতা বাড়তে থাকে। এটি মূলত কোরিয়ান 'গ্যাল্বি' থেকে প্রভাবিত, যা মাংসের স্টেকের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইয়াকিনিকু শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো 'ভাজা মাংস' এবং এটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। ইয়াকিনিকুর স্বাদ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এটি সাধারণত সয়া সস, মিষ্টি সয়া সস, এবং বিভিন্ন মশলার সাথে প্রস্তুত করা হয়। মাংসটি সাধারণত মেরিনেট করে নেওয়া হয় যাতে এর স্বাদ আরও বৃদ্ধি পায়। মেরিনেট করার জন্য সাধারণত গার্লিক, আদা, চিনি, সয়া সস ও মিষ্টি সয়া সসের ব্যবহার করা

How It Became This Dish

焼肉 এর উৎপত্তি জাপানের খাবার '焼肉' (ইয়াকিনিকু) এর উৎপত্তি মূলত কোরিয়ান খাবার 'গাল্বি' থেকে হয়েছে। ১৯শ শতকের শেষের দিকে, যখন কোরিয়ান অভিবাসীরা জাপানে আসতে শুরু করে, তখন তারা তাদের ঐতিহ্যবাহী মাংসের রান্নার পদ্ধতি নিয়ে আসে। ইয়াকিনিকুর অর্থ 'পুড়ে যাওয়া মাংস' এবং এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের মাংস, বিশেষ করে গরুর মাংস, শূকর এবং মুরগি দিয়ে তৈরি হয়। নতুন পরিবেশে ইয়াকিনিকুর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে, বিশেষ করে টোকিও এবং ওসাকার মতো শহরগুলোতে। ১৯০০ সালের দিকে, জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলে ইয়াকিনিকুর রেস্তোরাঁগুলি খোলা হয় এবং এটি স্থানীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে। এই সময়ে, ইয়াকিনিকুরকে সাধারণত গ্রিলের উপর রান্না করা হয়, যেখানে অতিথিরা নিজেদের পছন্দের মাংস এবং সবজি গ্রিল করতে পারে। সংস্কৃতিগত গুরুত্ব ইয়াকিনিকু জাপানি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে সামাজিক সমাবেশ ও উৎসবের সময়। এটি প্রায়শই বন্ধু এবং পরিবারের মধ্যে একটি মিলনমেলা হিসেবে দেখা হয়। জাপানে, ইয়াকিনিকু খাওয়ার সময় মানুষ একত্রিত হয়ে গল্প বলে, হাসিঠাট্টা করে এবং খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করে। এটি শুধু খাবার নয়, বরং একটি সামাজিক অভিজ্ঞতা। ইয়াকিনিকুর সময়, প্রতিটি অতিথি তাদের পছন্দের মাংস এবং সবজি গ্রিল করে এবং একে অপরের সাথে শেয়ার করে। এইভাবে, এটি জাপানি সংস্কৃতির বন্ধন এবং সহযোগিতার একটি চিত্র তুলে ধরে। ইয়াকিনিকুরের সাথে সাধারণত স্যাকার এবং অন্যান্য জাপানি পানীয় পরিবেশন করা হয়, যা খাবারের স্বাদকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ইয়াকিনিকুরের বিবর্তন ইয়াকিনিকুর সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, জাপানে পশ্চিমা খাবারের প্রবাহ শুরু হয় এবং ইয়াকিনিকুরও এর প্রভাব অনুভব করে। নতুন নতুন স্বাদের সংমিশ্রণ এবং রান্নার পদ্ধতি নিয়ে আসে ইয়াকিনিকুরকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। ১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকে, ইয়াকিনিকুর একটি জাতীয় খাবারে পরিণত হয়। এ সময়ে, জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ইয়াকিনিকুর রেস্তোরাঁ খোলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কুমামোতো অঞ্চলের 'কুমামোতো ইয়াকিনিকু' এবং কানসাই অঞ্চলের 'কানসাই ইয়াকিনিকু' সুনাম অর্জন করে। মাংসের ধরন ও প্রস্তুতি ইয়াকিনিকুর প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মাংসের গুণগত মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত গরুর মাংসের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়, যেমন 'রিবাই,' 'সিরলয়েন,' এবং 'ফ্ল্যাঙ্ক স্টেক।' এছাড়া, শূকরের মাংস এবং মুরগির মাংসও জনপ্রিয়। মাংসকে সাধারণত সয়া সস, মিরিন এবং চিনির মিশ্রণে ম্যারিনেট করা হয়, যা রান্নার সময় একটি বিশেষ স্বাদ তৈরি করে। গ্রিল করার সময়, ইয়াকিনিকুরকে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হয়, যাতে মাংসের বাইরের দিক ক্রিস্পি হয় এবং ভিতরের অংশ নরম থাকে। এটি প্রায়ই বিভিন্ন সবজি, যেমন পেঁয়াজ, কুমড়ো এবং মাশরুমের সাথে পরিবেশন করা হয়। বর্তমান সময়ের ইয়াকিনিকু আজকের দিনে, ইয়াকিনিকু শুধুমাত্র জাপানের ভেতরেই নয়, বরং সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক দেশের রেস্তোরাঁয় ইয়াকিনিকুরের বিভিন্ন সংস্করণ পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয় স্বাদ ও উপাদানের সাথে মিলিয়ে ইয়াকিনিকুরের নতুন নতুন রূপ তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে, ইয়াকিনিকুর 'গ্রিলড মিট' বা 'বারবিকিউ' সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এখানকার রেস্তোরাঁগুলি প্রায়শই গ্রিলিংয়ের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা খাবারের প্রস্তুতির প্রক্রিয়াকে আরও সুবিধাজনক এবং দ্রুত করে তোলে। সারসংক্ষেপ ইয়াকিনিকুর একটি প্রাচীন খাবার হলেও, এটি সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়েছে এবং জাপানি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি শুধুমাত্র খাবার নয়, বরং সম্পর্ক এবং বন্ধুত্বের একটি প্রতীক। ইয়াকিনিকুরের ইতিহাস আমাদের শেখায় যে খাবার কেবল পুষ্টির উৎস নয়, বরং সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। এখনও ইয়াকিনিকুর জাপানের মানুষের জন্য একটি প্রিয় খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং এটি তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি মূর্ত প্রতীক।

You may like

Discover local flavors from Japan